খারিজীরা ইসলামের সর্বপ্রথম বিপথগামী সম্প্রদায় । আকীদা, আমল ও খিলাফত সম্পর্কে বিতর্ক সৃষ্টি করে তারা নিজেদেরকে মুসলিম উম্মাহ্ থেকে আলাদা করে ফেলে । রাজনীতির ক্ষেত্রে তারা পুনঃ পুনঃ বিদ্রোহ করে সাময়িকভাবে খিলাফতে রাশিদার শেষ দুই বছর এবং উমাইয়া আমলে মুসলিম রাষ্ট্রের পূর্বাংশে অশান্তি সৃষ্টি করে; হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে আব্বাসীগণকে যুদ্ধে পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছিল।
'আল-মিলাল ওয়ান নাহল' গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছেঃ
খারিজী ঐ সম্প্রদায়ের লোকদের বলা হয় যারা এমন নিয়মতান্ত্রিক ইমামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে তাঁর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায়; যার ইমামতের আনুগত্যের প্রতি মুসলিম জনগন একমত পোষণ করেছেন । চাই এ বিদ্রোহ সাহাবায়ে কিরামের যামানার আইম্মায়ে রাশিদীনের বিরুদ্ধে হোক কিম্বা তাবিঈনের সময়কার মুসলিম জনগন স্বীকৃত ইমামগণের বিরুদ্ধে হোক অথবা পরবর্তী যুগের প্রতিষ্ঠিত ইমামগণের বিরুদ্ধে হোক, সকলেই খারিজীদের অন্তর্ভূক্ত ।
— ইমাম শাহরাস্তনী (রহঃ) [1808-1864] : আল-মিলাল ওয়ান নাহল, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৪
download full kitab: https://catalog.hathitrust.org/Record/006551349
খারিজী শব্দটির অর্থ হলো দলত্যাগী । মুসলিম জামা'আতকে পরিত্যাগ করায় খারিজীরা উক্ত নামে অভিহিত করা হয় ।
হযরত আলী (রাঃ) কে শহীদ করে তারাঃ
ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় ৬৫৭ খৃষ্টাব্দে হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মধ্যে সিফফিন নামক স্থানে তুমুল যুদ্ধ বাঁধে । যুদ্ধে হযরত মু'আবিয়া (রাঃ) নিশ্চিত পরাজয় অনুধাবন করেন । ফলে তাঁর দলের কতক লোক কুরআন শরীফ উর্দ্ধে উত্তোলন করে হযরত আলী (রাঃ) এর কাছে সন্ধির প্রস্তাব করেন । হযরত আলী (রাঃ) ও তাঁর অধিকাংশ সঙ্গী সন্ধি প্রস্তাবে সম্মত হন এবং দু'দল থেকে এতে দু'জন সালিস নিযুক্ত করা হয় । কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) এর একদল সমর্থক এ সালিসী প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত অন্য কারো ফয়সালা চলবে না; এ আওয়াজ তুলে তাঁর দল পরিত্যাগ করে । এ দলত্যাগী খারিজীরা আব্দুল্লাহ ইবন ওয়াহাবকে তাদের দলপতি নির্বাচন করে, তাঁর নেতৃত্বে নাহরাওয়ান নামক স্থানে শিবির স্থাপন করে । পরে খারিজীরা বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে প্রচারনা প্রচারনা চালাতে থাকে । হযরত আলী (রাঃ) এ সংবাদ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন । নাহরাওয়ানে সংঘটিত যুদ্ধে খারিজীদের নেতা আব্দুল্লাহ ইবন ওয়াহাবসহ বহুসংখ্যক খারিজী নিহত হয় । এতে খারিজীরা অতিশয় ক্রোধান্বিত হয়ে হযরত আলী (রাঃ), হযরত মু'আবিয়া (রাঃ) ও তাঁর উপদেষ্টা মিসরের শাসনকর্তা আমর ইবন আস (রাঃ) কে ইসলামের শত্রু হিসেবে স্থির করে এ তিনজনকে হত্যা করার জন্য বদ্ধপরিকর হয় । হযরত মু'আবিয়া ও হযরত আমর ইবন আস (রাঃ) কোনোক্রমে বেঁচে যান । কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) আততায়ী আব্দুর রহমান ইবন মুলযিমের হাতে শহীদ হন ।
খারিজীদের অন্যান্য ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রঃ
হযরত আলী (রাঃ) এর শাহাদাতের পর খারিজীরা নীরবে বসে থাকেনি । উমাইয়া শাসকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালধরে প্রচারনা চালাতে থাকে এবং আব্বাসীয়দের সাথে যোগাযোগ করে উমাইয়াদের পতন ত্বরান্বিত করে । আব্বাসীয় শাসকগণ যখন মসনদে সমাসীন হন, তখন খারিজীরা তাদেরও বিরোধিতা করে । এবং মেসোপটেমিয়া পূর্ব আরব ও উত্তর আফ্রিকার উপকূলে অশান্তির সৃষ্টি করে ।
খারিজী সম্প্রদায়ের ধ্বংসঃ
অবশেষে মিসরের ফাতেমী শাসকগণ খারিজীদের শক্তি সমূলে ধ্বংস করে দেন । ফলে রাজনৈতিক প্রচারণা বর্জন করে তারা শুধু একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ে পরিণত হয় ।
খারিজীদের সম্পর্কে হাদিসে বর্নিত ভবিষ্যৎবানীঃ
আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) হারুরিয়াদের সম্পর্কে বর্ননা প্রসঙ্গে বলেন, নবী করিম (সঃ) বলেছেন, তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায় । (সহিহ হাদিস)
পোস্টটি নেয়া হয়েছে এখান থেকেঃ-
http://www.sunnipediabd.com/wiki/%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%80
'আল-মিলাল ওয়ান নাহল' গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছেঃ
খারিজী ঐ সম্প্রদায়ের লোকদের বলা হয় যারা এমন নিয়মতান্ত্রিক ইমামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে তাঁর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায়; যার ইমামতের আনুগত্যের প্রতি মুসলিম জনগন একমত পোষণ করেছেন । চাই এ বিদ্রোহ সাহাবায়ে কিরামের যামানার আইম্মায়ে রাশিদীনের বিরুদ্ধে হোক কিম্বা তাবিঈনের সময়কার মুসলিম জনগন স্বীকৃত ইমামগণের বিরুদ্ধে হোক অথবা পরবর্তী যুগের প্রতিষ্ঠিত ইমামগণের বিরুদ্ধে হোক, সকলেই খারিজীদের অন্তর্ভূক্ত ।
— ইমাম শাহরাস্তনী (রহঃ) [1808-1864] : আল-মিলাল ওয়ান নাহল, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৪
download full kitab: https://catalog.hathitrust.org/Record/006551349
★ ↑ সংক্ষিপ্ত ইসলামিক বিশ্বকোষ, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৮৬-৩৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
★ ফাতাওয়া ওয়া মাসাইল (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)খারিজী শব্দটির অর্থ হলো দলত্যাগী । মুসলিম জামা'আতকে পরিত্যাগ করায় খারিজীরা উক্ত নামে অভিহিত করা হয় ।
হযরত আলী (রাঃ) কে শহীদ করে তারাঃ
ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় ৬৫৭ খৃষ্টাব্দে হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মধ্যে সিফফিন নামক স্থানে তুমুল যুদ্ধ বাঁধে । যুদ্ধে হযরত মু'আবিয়া (রাঃ) নিশ্চিত পরাজয় অনুধাবন করেন । ফলে তাঁর দলের কতক লোক কুরআন শরীফ উর্দ্ধে উত্তোলন করে হযরত আলী (রাঃ) এর কাছে সন্ধির প্রস্তাব করেন । হযরত আলী (রাঃ) ও তাঁর অধিকাংশ সঙ্গী সন্ধি প্রস্তাবে সম্মত হন এবং দু'দল থেকে এতে দু'জন সালিস নিযুক্ত করা হয় । কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) এর একদল সমর্থক এ সালিসী প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত অন্য কারো ফয়সালা চলবে না; এ আওয়াজ তুলে তাঁর দল পরিত্যাগ করে । এ দলত্যাগী খারিজীরা আব্দুল্লাহ ইবন ওয়াহাবকে তাদের দলপতি নির্বাচন করে, তাঁর নেতৃত্বে নাহরাওয়ান নামক স্থানে শিবির স্থাপন করে । পরে খারিজীরা বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে প্রচারনা প্রচারনা চালাতে থাকে । হযরত আলী (রাঃ) এ সংবাদ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন । নাহরাওয়ানে সংঘটিত যুদ্ধে খারিজীদের নেতা আব্দুল্লাহ ইবন ওয়াহাবসহ বহুসংখ্যক খারিজী নিহত হয় । এতে খারিজীরা অতিশয় ক্রোধান্বিত হয়ে হযরত আলী (রাঃ), হযরত মু'আবিয়া (রাঃ) ও তাঁর উপদেষ্টা মিসরের শাসনকর্তা আমর ইবন আস (রাঃ) কে ইসলামের শত্রু হিসেবে স্থির করে এ তিনজনকে হত্যা করার জন্য বদ্ধপরিকর হয় । হযরত মু'আবিয়া ও হযরত আমর ইবন আস (রাঃ) কোনোক্রমে বেঁচে যান । কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) আততায়ী আব্দুর রহমান ইবন মুলযিমের হাতে শহীদ হন ।
খারিজীদের অন্যান্য ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রঃ
হযরত আলী (রাঃ) এর শাহাদাতের পর খারিজীরা নীরবে বসে থাকেনি । উমাইয়া শাসকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালধরে প্রচারনা চালাতে থাকে এবং আব্বাসীয়দের সাথে যোগাযোগ করে উমাইয়াদের পতন ত্বরান্বিত করে । আব্বাসীয় শাসকগণ যখন মসনদে সমাসীন হন, তখন খারিজীরা তাদেরও বিরোধিতা করে । এবং মেসোপটেমিয়া পূর্ব আরব ও উত্তর আফ্রিকার উপকূলে অশান্তির সৃষ্টি করে ।
খারিজী সম্প্রদায়ের ধ্বংসঃ
অবশেষে মিসরের ফাতেমী শাসকগণ খারিজীদের শক্তি সমূলে ধ্বংস করে দেন । ফলে রাজনৈতিক প্রচারণা বর্জন করে তারা শুধু একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ে পরিণত হয় ।
খারিজীদের সম্পর্কে হাদিসে বর্নিত ভবিষ্যৎবানীঃ
আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) হারুরিয়াদের সম্পর্কে বর্ননা প্রসঙ্গে বলেন, নবী করিম (সঃ) বলেছেন, তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায় । (সহিহ হাদিস)
পোস্টটি নেয়া হয়েছে এখান থেকেঃ-
http://www.sunnipediabd.com/wiki/%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%80