আপনি কি খুব কষ্টে আছেন? ইবাদত করতে খুব কষ্ট হয়? নিজের রক্ত ঝরিয়ে ইসলাম পেতে হয় নি তো তাই অল্প তেই ধৈর্যহারা।


তোমার কষ্ট বেশি নয় বন্ধু! 
বিসমিল্লাহ। আলহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ। 
তোমার থেকে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছেন আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম। সমস্ত নবী ও রাসুলদের সর্দার, বিশ্বজগতের জন্যে রহমত স্বরূপ, এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, আল্লাহর নিকট সবচাইতে প্রিয়তম বান্দা. . .এতো বড় মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও কত কষ্ট পেয়েছেন তিনি, তাহলে তুমি কে? তুমি তাঁর কথা স্বরণ করে সান্ত্বনা নাও।

(★) মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ মসিবতে (অর্থাৎ দুঃখ-কষ্ট কিংবা বিপদ-আপদে) পড়ে, তখন সে যেন আমার জীবনের মসীবতের কথা স্বরণ করে (সান্ত্বনা নেয়)। কারণ আমার জীবনের মসীবত তোমাদের সবার মসিবতের চাইতে বড়।” [ইবনে সা’দ, সহীহুল জামিঃ ৩৪৭] . 

(★) হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ) এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি। (হাদিস ৫৫০)


(★) মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্মের পূর্বে, মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতেই তাঁর পিতা মারা যান। ছয় বছর বয়সে তাঁর মাতাও ইন্তিকাল করেন। আট বছর বয়সে দাদা ইন্তিকাল করেন। 
(★) নামাযের সেজদারত অবস্থাতে তাঁর ঘাড়ে উটের নাড়ি-ভূড়ি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এতো ভারী ছিলো যে, সেই নাড়ি-ভূড়ির কারণে তিনি সেজদাহ থেকে মাথা তুলতে পারছিলেন না। 
(★) তায়েফে পাথর ছুঁড়ে তাঁকে এতো আহত করার হয়েছিলো যে, শরীরের আঘাত থেকে রক্তের ধারা প্রবাহিত হয়ে তাঁর দুইপা রঙ্গিন হয়ে গিয়েছিলো। আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আবার জ্ঞান ফিরে আসে পুনরায় পাথর মারা হয়।
(★) নিকট আত্মীয়-স্বজনদেরকে সহ তাঁকে একঘরে করে ‘শিবে আবী তালেব’ নামক একটি পাহাড়ের উপত্যকায় দুই বা তিনি বছর ধরে অবরোধ করে রাখা হয়েছিলো। সে সময় খাবার না পেয়ে, চরম দারিদ্রতা ও ক্ষুদার কারণে তাঁরা সবাই পশুর চামড়া এবং গাছের পাতা চিবিয়ে খেতে বাধ্য হয়েছিলেন। 
(★) এমনকি নিজের মাতৃভূমি থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। জীবন রক্ষার জন্যে তিনি মদীনাতে হিজরত করে চলে যান। 
(★) তাঁর কত সাথী ও অনুসারীদেরকে হত্যা করা হয়েছিলো। 
(★) উহুদের যুদ্ধে তাঁর দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিলো। 
(★) তাঁর নিষ্পাপ, পবিত্র স্ত্রীর চরিত্র সম্পর্কে জঘন্য অপবাদ দেওয়া হয়েছিলো। 
(★) একটি মাত্র মেয়ে ছাড়া তাঁর দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে, কলিজার টুকরা মোট পাঁচজন সন্তান তাঁর জীবদ্দশায়, চোখের সামনেই মৃত্যু বরণ করেছিলেন। 
(★) ক্ষুদার তাড়নায় তিনি পেটে পাথর বেঁধেছিলেন, দিনের পর দিন তাঁর বাড়িতে রান্নার জন্যে চুলা জ্বলতোনা। 
(★) লোকেরা তাঁকে পাগল, কবি, মিথ্যাবাদী, জাদুকর ইত্যাদি বলে গালি দিতো।
(★) কতবার তাঁকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। একবার তাঁর মাথার উপরে পাথর ফেলে দিয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিলো, আল্লাহর তাঁকে রক্ষা করেছিলেন। আরেকবার এক ইহুদী মহিলা খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিলো। সেই খাবার খেয়ে একজন সাহাবী মৃত্যুবরণ করেছিলেন, আর এই বিষের যন্ত্রনায় কলিজা ছিঁড়ে গেলে যেমন কষ্ট হয়, তেমনি কষ্ট তিনি মৃত্যুর পূর্বে ভোগ করেছিলেন।


তুমি আরো জানো যে, 

★ করাত দিয়ে চিড়ে যাকারিয়া নবীকে দুই খন্ড করে হত্যা করা হয়েছিলো। 
★ যাকারিয়ার পুত্র আরেক ইয়াহইয়া নবীকেও খুন করা হয়েছিলো। 
★ইব্রাহীম নবীকে বিশাল বড় আগুনে ফেলে দেওয়া হয়েছিলো। 
★ চরম বালা (পরীক্ষা) দেওয়া হয়েছিলো আইয়ুব নবীকে (দেহ মোবারকে ধৈর্যের পরীক্ষা স্বরুপ পচন ধরেছিল)।
★ মসীবতে ফেলা হয়েছিলো ইউনুস নবীকে (মাছ খেয়ে ফেলেছিল)। 
★ হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিলো ঈসা নবীকে। 

আল্লাহ তাঁদের সকলের প্রতি শান্তি ও দয়া বর্ষণ করুন। 

★ এছাড়াও মসজিদের ভেতরে নামায পড়া অবস্থাতে খঞ্জর মেরে শহীদ করা হয়েছিলো দ্বিতীয় খলিফা উমারকে।
★ ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে ক্বুরান তেলাওয়াত করা অবস্থাতে খুন করা হয়েছিলো তৃতীয় খলিফা উসমানকে।
★ বিষাক্ত ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছিলো চতুর্থ খলিফা আলীকে। 
★ বর্শা দিয়ে লজ্জাস্থানে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছিলো এই উম্মতের প্রথম শহীদ সুমাইয়াকে। 
★ শহীদদের সর্দার, নবীর প্রাণপ্রিয় আপন আপন চাচা ও দুধভাই হামযাকে হত্যা করা হয়েছিলো, মৃত্যুর পরে তাঁর কলিজা খেয়েছিলো এক মুশরেক মহিলা (হিন্দা), অবশ্য পরে সেই মহিলা ইসলাম গ্রহণ করেছিলো রাসুলের কাছেই।
★ একজন ক্বুরানের হাফেজ সাহাবীকে বর্শা দিয়ে এমনভাবে বিদ্ধ করেছিলো যে সেই বর্শা বুকের একপাশ দিয়ে ঢুকে আরেকপাশ দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলো। তবুও মৃত্যুর পূর্বে সে চিৎকার করে বলেছিলো, কাবার রব্বের কসম! আমিতো সফলকাম হয়ে গেছি। আল্লাহ তাঁদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন।
★ কারবালায় নির্মম ভাবে শহীদ করা ইমাম হোসাইন (রা) ও আহলে বাইয়াতগণকে।

আহা এত কষ্টের মধ্য দিয়ে দ্বীন ইসলাম জিন্দা হয়েছিল। আজ আমাদের দ্বীনের একি করুন দশা।
আল্লাহ 
পাক 
আমাদের 
হেদায়াত ক
রুন।


0 Comments:

Post a Comment

 
Top
Blogger Template