Courtesy : Abu Ayaub Al Qadri
ওলী আল্লাহ পর্ব ৩
এই পর্বে আছে আল্লাহর ওলীদের পরকালীন জীবন নিয়ে আলোচনা..আল্লাহর ওলীরা কবরে জীবিত কিনা এই নিয়ে বিপক্ষরা অনেক বিভ্রান্তির শৃষ্টি করে.... আসুন কুরান ও হাদীস তাদের সম্বন্ধে কি বলে লক্ষ করি..... তার জন্য কুরান থেকে আয়াতে করিমা লক্ষ করুন
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُون
"আল্লাহর পথে যারা মৃত্যু বরন করে তাদের তোমরা মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত.. কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না...."
সুরা-বাকারহ,আয়াত-১৫৪
এইবার হয়তো বলতে পারে এই আয়াত তো শহীদদের উদ্দেশ্যে... আল্লাহর ওলীরা শহীদ নাকি.....? কুরান বলে হ্যা যারা প্রকৃত মোমিন তারাও শহীদ.... দলিল হিসাবে কুরানের আয়াতে করিমা....
وَالَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ أُولَٰئِكَ هُمُ الصِّدِّيقُونَ ۖ وَالشُّهَدَاءُ عِندَ رَبِّهِمْ
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ইমান (কামিল ইমান)আনে তারাই তাদের রবের নিকট সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত....
সুরা হাদীদ,আয়াত-১৯
এইবার আসুন হাদীসের আলোকে লক্ষ করি... যে আল্লাহর ওলীরা কিভাবে শহীদ.....
باب بَيَانِ الشُّهَدَاءِ
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَعُدُّونَ الشَّهِيدَ فِيكُمْ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ قَالَ " إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ " . قَالُوا فَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ مَاتَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ
" .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তোমাদের মধ্যকার কাদেরকে শহীদ বলে গণ্য কর? তারা বললেন, “হে আল্লাহর রসূল! যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জীবন দেয় সে তো শহীদ।" তিনি বললেন, তবে তা আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা অতি অল্প হবে... قَالُوا فَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ তখন তারা বললেন, তাহলে তারা কারা হে আল্লাহর রসূল! مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيد....ٌ বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাহে (জিহাদে) নিহত হয় সেও শহীদ .... وَمَنْ مَاتَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيد.ٌ .... আবার যে ব্যক্তি আল্লাহর রাহে (আত্মউতসর্গ করে ) মৃত্যুবরণ (স্বাভাবিক)করে সেও শহীদ
সহী বুখারী, কিতাবু জিহাদ, হাদীস নং- ৬৫৪, ২৪৭২
, মুসলিম সরিফ, কিতাবু জিহাদ , হাদীস নং-১৯১৪, ১৯১৫,
তিরমিযী সরিফ, হাদীস নং- ১০৬২, ১৯৫৮
,সুনানেআবূ দাউদ , হাদীস নং-৫২৪৫,
ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৮০৪, ৩৬৮২,
মুসনাদে আহমাদ , হাদীস নং-৭৭৮২, ৭৯৭৯, ৮১০৬, ৮৩১৫, ৯১১৫,
مات على فراشه أو بأي حتف شاء الله فإنه شهيد وإن له الجنة
আল্লাহর রাযামনদিতে বা আল্লাহর মরজি বা ইচ্ছার উপর নিজেকে উৎসর্গিত করে বিছানায় মৃত্যুবরণ করলেও সে শহীদ হয় এবং তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়ে যায়।
হাকিম আল মুস্তাদরাক, হাদীস নং-২৪৬৩
সুনান আল কুবরা, হাদীস নং-১৭৯৭১
সুনানে আবু দাউদ কিতাবু জিহাদ,হাদীস নং- ২৪৯৯
তাহলে কুরান ও হাদীস থেকে বোঝা গেলো যারা প্রকৃত মোমিন অর্থাৎ আল্লাহর রাযামনদিতে তার (আল্লাহর) রাস্তায় যেকেও জীবন কাটিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু বরন করলো... বা যদি অন্য কোন দুর্ঘটনায় যেমন হাদীসে আছে পানি ডুবে, মৃত্যু বরন করলেও শহীদ হবে, প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে শহীদ হবে, ঊঠের কামড়ে মারা গেলে শহীদ হবে কেও বিষক্রীয়ায় (কারোর দ্বারা) মারা গেলো শহীদ হবে.... এখানে বলার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নামে নিজের জীবনকে করে দিয়ে. তার রাস্তায় জীবন অতিবাহিত করতে করতে যে ভাবেই মারা যাক শহীদ বলে পরিগনিত হবে.... তাদের সম্বন্ধে কুরান বলে... وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُون
"আল্লাহর পথে যারা মৃত্যু বরন করে তাদের তোমরা মৃত বল না। বরং তারা জীবিত.. কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না...."কুরান যদের জীবিত বলছে তাদের কেও মৃত বললে সে নিশ্চিতভাবে কুরানের বিরোধিতা করছে... আর কুরানের বিরোধিতা করা মানে ইশলাম থেকে খারীজ হয়ে যাওয়া...কুরান অনুযায়ী তারা জীবিত আমরা তাদের টের পেতে পারি আর না পারি সেটা ভিন্ন বিষয়...এইবার আসুন একটা প্রশ্ন সবসময় উদয় হয় তাদের জীবন কি আমাদের মত....?তাহলে আসুন হাদীস ও তার আলোকে আইম্মাদের বক্তব্য লক্ষ করি....
عَنْ مَسْرُوقٍ قَال:َ سَأَلْنَا عَبْدَ اللَّهِ (هو ابن مسعود -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ-) عَنْ هَذِهِ الْآيَة:ِ ﴿وَلَاتَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمۡوَٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ﴾ قَالَ: أَمَا إِنَّا قَدْ سَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «أَرْوَاحُهُمْ فِي جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ لَهَا قَنَادِيلُ مُعَلَّقَةٌ بِالْعَرْشِ تَسْرَحُ مِنْ الْجَنَّةِ حَيْثُ شَاءَتْ ثُمَّ تَأْوِي إِلَى تِلْكَ الْقَنَادِيلِ
মাসরুক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদকে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম..... “আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদেরকে তুমি মৃত মনে করো না, বরং তারা তাদের রবের নিকট জীবিত। তাদেরকে রিযক দেয়া হয়...তিনি বলেন, জেনে রেখ, আমরাও এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তাদের রূহগুলি সবুজ পাখির পেটে, যার জন্য রয়েছে আরশের সাথে ঝুলন্ত প্রদীপ, সে জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা ভ্রমণ করে, অতঃপর উক্ত প্রদীপে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে।
সহী মুসলিম,কিতাবুল ইমারাত,হাদীস নং-১৮৮৭
সুনানে ইবনে মাজাহ, কিতাবুল জিহাদ,হাদীস নং-২৮০১
সুনানে তিরমিজি, কিতাবু জিহাদ,হাদীস নং-৩০১১
সুনানে দারমী,কিতাবুজ জিহাদ,হাদীস নং-২১৪০
অর্থাৎ প্রথমে তো কুরানে উক্ত আয়াত (যা হাদিসে উল্লেখিত)থেকে বোঝা যায় তারা আল্লাহর তরফ থেকে রিজিক পায়.... যেমন দুনিয়ার বুকে মানূষ পেয়ে থাকে... এবং তারা জান্নাতের যেখানে খুশি বিচরন করে তাদের আশ্রয় স্থল... অর্থাৎ আল্লাহ তাদের জন্য প্রদীপ মত বানিয়ে দিয়েছেন সেখানে পুনরায় ফিরে যান... যেমনটি আমরা দুনিয়া বাসী দুনিয়ায় বিচরন করি.. সেই জন্য ইবনে জৌযি বলেন :
ﻭﻳﺪﻝ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ ﺑﻌﺪ ﻗﺘﻠﻬﻢ ﻭﻣﻮﺗﻬﻢ ﺃﺣﻴﺎﺀ ﻋﻨﺪ ﺭﺑﻬﻢ ﻳﺮﺯﻗﻮﻥ ﻓﺮﺣﻴﻦ ﻣﺴﺘﺒﺸﺮﻳﻦ ﻭﻫﺬﻩ ﺻﻔﺔ ﺍﻷﺣﻴﺎﺀ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ
সেই কারনে শহীদগন তাদের কতল ও তাদের মৃত্যু ঘটার পরও নিজের রবের নিকট জীবত এবং রিযক প্রাপ্ত...আনন্দিত ও উতফুল্ল যা পৃথিবীতে যারা বেচে আছে তাদের বৈশিষ্ট ..
কিতাবুর রুহ, ইবনে কাইয়াম জোউযি,খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬
,,দারুল কিতাব আলিমিয়া,বেইরুত
আর ইমাম বাইহাকি বলেন
قال البيهقي في كتاب الاعتقاد : الأنبياء بعد ما قبضوا ردت إليهم أرواحهم فهم أحياء عند ربهم كالشهداء
.
ইমাম বাইহাকি তার এইতেকাদ কিতাবে বলেন....নবীগনকে তাদের রুহ গুলি কবজ করার পর ফিরিয়ে দেওয়া হয়... তাই তারা শহীদ গনের ন্যায় জিবীত....
এইবার প্রশ্ন আসতে পারে সত্যি কি নবী গন (আলাইহিস সালাম)ও শহীদদের রুহ তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়.... কারন আবার বড় বড় পন্ডিতরা রয়েছে যাদের ইমামদের বক্তব্য হজম হয়না...আসুন হাদীসের আলাকে দেখি....তাদের বক্তব্য হাদীসের বিরুদ্ধে নয়...
باب زيارة القبور
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن رسول الله صلى الله عليه قال : " ما من أحد يسلم علي إلا رد الله علي روحي حتى أرد عليه السلام "
আবু হুরাইরা হইতে বর্নিত.... রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন....যদি তোমাদের মধ্যে কেউ আমার উপর সালাম প্রেরন করে.... আল্লাহ আমার রুহ আমার নিকট ফিরিয়ে দেন....আমি ঐ লোকের সালামের জবাব দি...
সুনানে আবু দাউদ,খন্ড-২ বাব যিয়ারাতে কুবুর,হাদীস নং-২০৪১
ইমাম তাবরানি মাআজুমুল আউসাত,খন্ড-২,হাদীস নং-৩০৯২
ইমাম বাইহাকি শুয়েবুল ইমান,খন্ড-২ হাদীস নং-১৫৪১
মিস্কাতুল মাসাবী,খন্ড-১,হাদীস নং-৯২৫
মাজমাউজ যাওয়াইদ,হাদীস নং-১৭২৯৬
মুস্নাদে আহমাদ,হাদীস নং-১০৮২৭
হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে.... এখানে তো নবীর কথা বলা হয়েছে... শহীদের ব্যাপারে.কোথায় .. নবী আর শহীদকে এক করলেন...? উত্তর নবীদের (আলাইহিসসালাম)নবুয়াতের মর্যদার সঙ্গে সঙ্গে শহীদের মর্যদাও পান তাই তাদের মর্যদা শহীদের উর্ধে যেমন একটা হাদীস লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন নবী (আলাইহিসসালাম)আল্লাহর রাস্তায় কতল না হয়েও শহীদ. এই হাদিস লক্ষ করুন
. حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ ، حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ ، عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " لَأَنْ أَحْلِفَ بِاللَّهِ تِسْعًا ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُتِلَ قَتْلًا ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ وَاحِدَةً ، وَذَلِك بِأَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ اتَّخَذَهُ نَبِيًّا ، وَجَعَلَهُ شَهِيدًا
" .
হজরতে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন নবীএ করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শহীদ করা হয়েছে এই মর্মে আমার নিকট নয়বার শপথ করা অধিক প্রীয়, তাকে শহীদ করা হয়নি একবার শপথ করার থেকেও.... কারণ আল্লাহ তাআলা যেমন তাকে নবী হিসাবে গ্রহন করেছেন তেমন শহীদ হিসাবেও... গ্রহন করেছেন...
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৪৮৫,৩৭৪২, ৩৯৯৪,
হাকিম আল মুস্তাদরাক,খন্ড,-৩, হাদীস নং-৪৩৩৯
মুসনাদে আব ইয়ালা,হাদীস নং- ৫১৫১
ইমাম বাইহাকি,দালায়েলু নবুয়াহ,হাদীস নং-৩১০৩
ইবনে সাআদ,তাবকাতুল কুবরা, হাদীস নং-১৯৮১
তাহলে লক্ষ করুন অতি পরিচিত আয়াতে কারিমা.
. أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
খবরদার যারা আল্লাহর ওলী (রহ:)তাদের কোন ভয় ভীতি নেই এবং তারা দুঃখিত হন না...
সুরা ইউনুস, আয়াত-৬২
আল্লাহর ওলীরাও (রহ:)জীবিত... কিন্তু মনে রাখতে হবে তাদের জীবন বার্যাখি..... কিন্তু প্রশ্ন হলো বার্যাখ অর্থ কি... তাহলে কুরানের এই আয়তে কারিমা দেখুন
ۖ وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
তাদের সামনে পর্দা ( بَرْزَخٌ) আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত..
সুরা -মোমিন, আয়াত নং-১০০
অর্থাৎ এই আয়াত থেকে বোঝা যায় তারা(আলাহর ওলীরা) বারযাখ অর্থাৎ পর্দার আড়ালে জীবিত আছেন..তারা শুধু পার্থীব জীবন ছেড়ে অন্যত্র পর্দার আড়ালে জীবিত আছেন .... এইবার আওলীয়া আল্লাহ(রহঃ) তার যে তাদের কবরে জীবিত থাকেন... হাদীসের আলোকে কয়েকটি ঘটনার মাধ্যমে লক্ষ করি......
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟْﻤَﻠِﻚِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟﺸَّﻮَﺍﺭِﺏِ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺍﻟﻨُّﻜْﺮِﻱُّ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺠَﻮْﺯَﺍﺀِ، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ، ﻗَﺎﻝَ ﺿَﺮَﺏَ ﺑَﻌْﺾُ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺧِﺒَﺎﺀَﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﺒْﺮٍ ﻭَﻫُﻮَ ﻻَ ﻳَﺤْﺴِﺐُ ﺃَﻧَّﻪُ ﻗَﺒْﺮٌ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻓِﻴﻪِ ﺇِﻧْﺴَﺎﻥٌ ﻳَﻘْﺮَﺃُ ﺳُﻮﺭَﺓَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﺣَﺘَّﻰ ﺧَﺘَﻤَﻬَﺎ ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﺿَﺮَﺑْﺖُ ﺧِﺒَﺎﺋِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﺒْﺮٍ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻻَ ﺃَﺣْﺴِﺐُ ﺃَﻧَّﻪُ ﻗَﺒْﺮٌ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻓِﻴﻪِ ﺇِﻧْﺴَﺎﻥٌ ﻳَﻘْﺮَﺃُ ﺳُﻮﺭَﺓَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﺣَﺘَّﻰ ﺧَﺘَﻤَﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ " ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺎﻧِﻌَﺔُ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤُﻨْﺠِﻴَﺔُ ﺗُﻨْﺠِﻴﻪِ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ " . ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻫَﺬَﺍ ﺣَﺪِﻳﺚٌ ﺣَﺴَﻦٌ
ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ কোন এক সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক সাহাবী একটি কবরের উপর তার তাবু খাটান... তিনি জানতেন না যে, সেটি একটি কবর.... তিনি হঠাৎ বুঝতে পারেন যে, কবরের ভিতরে একটি লোক সূরা আল-মুলক পাঠ করছে। সে তা পাঠ করে সমাপ্ত করলো... তারপর তিনি নাবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বললেনঃ ইয়া আল্লাহর রাসূল! আমি একটি কবরের উপর তাঁবু খাটাই...আমি জানতাম না যে, তা কবর। হঠাৎ বুঝতে পারি যে, একটি লোক সূরা আল-মুলক পাঠ করছে এবং তা সমাপ্ত করেছে.... রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সূরাটি প্রতিরোধকারী নাজাত দানকারী... এটা কবরের আযাব হতে তিলাওয়াতকারীকে নাজাত দান করে...
সুনানে তিরমিযি,অধ্যায়ফাজাএলে কুরান,হাদীস নং-২৮৯০
মাআজুমুল,কাবীর, হাদীস নং১২৮০১
হাদীসে লক্ষ করতে পারেন যে কবরে ভিতরে একজন সুরা মুলক পাঠ করছে.... তার অর্থ সে যদি জীবিত না থাকে সুরা মুলক পাঠ করতে পারছেন কি করে.. অর্থাৎ বোঝা যায় আল্লাহর ওলীরা (রহ:)কুরান পাঠের মত আমলও কবরে মধ্যে করতে থাকেন...এবং আর একটা জিনিশ লক্ষ করার বিষয় আছে.... আল্লাহর কুদরতে সেই সাহাবীকে(রা আ) জানিয়ে দিলেন তিনি কবরে কুরানের আয়াত পাঠ করছেন..এইবার আওলীয়া আল্লাহ (রহ:) তারা যে কবরে জীবিত তা নিয়ে যারা সন্দেহ করে তাদের জন্য এই ঘটনা দৃষ্টান্ত স্বরুপ...
দ্বিতীয় ঘটনা.....
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ ﺑْﻦُ ﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞَ ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻭَﻛِﻴﻊٌ ، ﻭَﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻧُﻤَﻴْﺮٍ , ﻋَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺑِﻴﻊِ ﺑْﻦِ ﺳَﻌْﺪٍ ﺍﻟْﺠُﻌْﻔِﻲِّ ، ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦِ ﺳَﺎﺑِﻂٍ ، ﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺣَﺪِّﺛُﻮﺍ ﻋَﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻓِﻴﻬِﻢُ ﺍﻷَﻋَﺎﺟِﻴﺐُ ، ﺛُﻢَّ ﺃَﻧْﺸَﺄَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺧَﺮَﺟَﺖْ ﺭُﻓْﻘَﺔٌ ﻣَﺮَّﺓً ﻳَﺴِﻴﺮُﻭﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﻓَﻤَﺮُّﻭﺍ ﺑِﻤَﻘْﺒَﺮَﺓٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻟِﺒَﻌْﺾٍ : ﻟَﻮْ ﺻَﻠَّﻴْﻨَﺎ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﺛُﻢَّ ﺩَﻋَﻮْﻧَﺎ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻌَﻠَّﻪُ ﻳُﺨْﺮِﺝُ ﻟَﻨَﺎ ﺑَﻌْﺾَ ﺃَﻫْﻞِ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻤَﻘْﺒَﺮَﺓِ ﻓَﻴُﺨْﺒِﺮُﻧَﺎ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺼَﻠُّﻮﺍ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﺛُﻢَّ ﺩَﻋَﻮْﺍ ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫُﻢْ ﺑِﺮَﺟُﻞٍ ﺧِﻼﺳِﻲٍّ ﻗَﺪْ ﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﺮٍ ﻳَﻨْﻔُﺾُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ، ﺑَﻴْﻦَ ﻋَﻴْﻨَﻴْﻪِ ﺃَﺛَﺮُ ﺍﻟﺴُّﺠُﻮﺩِ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﻫَﺆُﻻﺀِ ﻣَﺎ ﺃَﺭَﺩْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻟَﻘَﺪْ ﻣِﺖُّ ﻣُﻨْﺬُ ﻣِﺎﺋَﺔِ ﺳَﻨَﺔٍ ﻓَﻤَﺎ ﺳَﻜَﻨَﺖْ ﻋَﻨِّﻲ ﺣَﺮَﺍﺭَﺓُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ، ﻓَﺎﺩْﻋُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻥْ ﻳُﻌِﻴﺪَﻧِﻲ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﻨْﺖُ ” .
হজরতে জাবীর বিন আব্দুল্লাহ হইতে বর্নিত... তিনি বলেন রসুলুল্লাহ সাল্লালাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইর্শাদ করেন...তোমরা বনী ইসরাইলদের ঘটনা বর্ণনা করো...কেননা তাদের মাঝে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে...এরপর রাসূলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন,....একদা বনী ইসরাইলের কয়েকজন বন্ধু বের হল...তারা একটি কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিল.... তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলো..... আমরা যদি, দুই রাকাত নামায আদায় করে আল্লাহর নিকট দুয়া করি....তাহলে আল্লাহ তায়ালা হয়তো কবরের কোন ব্যক্তিকে আমাদের সামনে উপস্থিত করবেন...সে মৃত্যু সম্বন্ধে আমাদেরকে বলবে....অতঃপর তারা দুরাকাত নামায আদায় করল... এরপর আল্লাহর কাছে দুয়া করল....হঠাৎ এক ব্যক্তি মাথা থেকে মাটি পরিষ্কার করতে করতে কবর থেকে বের হয়ে এল... তার কপালে সিজদার চিহ্ন ছিল... সে বলল, তোমরা কী চাও...? আমি একশ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছি.... এখনও আমার দেহ থেকে মৃত্যুর যন্ত্রনা হ্রাস পায়নি.... আল্লাহর নিকট দুয়া করো, যাতে তিনি আমাকে পূর্বের স্থানে (কবরে) ফেরত পাঠিয়ে দেন``
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা,হাদীস নং-২৫৯০৫
ইমাম ইবনে হাজার আস্কালানী.,মাসানিদে সামানিয়া,হাদীস নং-৮০৭
মুসনাদে আবদ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-১১৬৪
ফাওয়াইদে তামাম রাযি, পৃষ্ঠা-২১৭
তাম্বিউল গাফেলিন, আহাদীসে আম্বীয়া ওয়াল মুরসালিন,পৃষ্ঠা-১১
ইবনে আবি শাইবাহ, আল আদাব,পৃষ্ঠা-২০৬
ইবনে আবিদ দুনিয়া ., মান আশা বা’দাল মাউত,,পৃষ্ঠা-৫৮
ফুনুন আল আজাইব,পৃষ্টা-১১৯,১২০
মাজালিশ মিন আমালি, পৃষ্ঠা-৩৯৩
খাতিব বাগদাদী,আল-জামে আখলাকির রাবী হাদীস নং-১৩৭৮
ইবনে আবি দাউদ, আল-বাআস, হাদীস নং-৫
আজ-জুহদ, ইমাম ওয়াকী ইবনে জাররাহ, পৃষ্ঠা-৫৪
, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল, কিতাব- আজ-জুহদ,পৃষ্ঠা-৮৮
মাজালিস মিন আমালি ইবনে মান্দাহ, ইবনে মান্দাহ, হাদীস নং- ৩৯৩
ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতী, শরহুস সুদুর, পৃষ্ঠা-.৪৩
এই ঘটনায় নিশ্চিত ভাবে বনী ইশ্রাইলের নেক স্বলেহ কবর বাসীর বর্ননা হচ্ছে কারন হলো তার মাথায় সেজদার চিহ্নের সম্বন্ধে বর্ননা করা হচ্ছে....... তা প্রমান করে উক্ত কবরবাসী নেক এবং স্বলেহ বা আল্লাহর ওলী ছিলেন.... এই হাদীসে কবর থেকে উঠে আসার ঘটনা থেকেও প্রমান পাওয়া যায়, যে আল্লাহর ওলীরা জীবিত।
(