কারবালা (নয়) - ইয়াযীদ সম্পর্কে মহানবী (সাঃﷺ) এর ভবিষ্যত বাণী
- ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
=============
কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার পূর্বাভাষ রাসূল ﷺ নিজেই দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে অনেকগুলো সহীহ হাদিস রয়েছে। কোন কোন হাদিসে আবার সরাসরি এজিদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করে হলো।
১। তৃতীয় শতাব্দীর এক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম আবু ইয়া’আল (রঃ) তাঁর মুসনাদ (ভলিঃ ২, পৃঃ ৭১) সহীহ সনদে উল্লেখ করেনঃ
"হযরত আবু উবায়দাহ বিন জাররাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃﷺ) বলেছেন – “মুসলিম উম্মাহর যাবতীয় কাজ কারবারে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়পরায়ণতা পরিলক্ষিত হবে যখন বনি উম্যায়াহ গোত্রের এক জন এসে দ্বীনের মধ্যে ফাটল ধরাবে। তার নাম হবে ইয়াজিদ।”
- ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
=============
কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার পূর্বাভাষ রাসূল ﷺ নিজেই দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে অনেকগুলো সহীহ হাদিস রয়েছে। কোন কোন হাদিসে আবার সরাসরি এজিদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করে হলো।
১। তৃতীয় শতাব্দীর এক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম আবু ইয়া’আল (রঃ) তাঁর মুসনাদ (ভলিঃ ২, পৃঃ ৭১) সহীহ সনদে উল্লেখ করেনঃ
"হযরত আবু উবায়দাহ বিন জাররাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃﷺ) বলেছেন – “মুসলিম উম্মাহর যাবতীয় কাজ কারবারে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়পরায়ণতা পরিলক্ষিত হবে যখন বনি উম্যায়াহ গোত্রের এক জন এসে দ্বীনের মধ্যে ফাটল ধরাবে। তার নাম হবে ইয়াজিদ।”
২। আরেক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বিন হাজর হায়তামী (রঃ) তাঁর আস-সাবাক আল-মুহরিকা গ্রন্থের ১৩২ পৃঃ ভিন্ন সনদে একই হাদীস উল্লেখ করেছেন।
"হযরত আবু দারদা (রাঃ) বলেছেন, “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ (সাঃﷺ) বলেছেন – আমার সুন্নাহকে পরিবর্তনকারী প্রথম ব্যক্তি হবে বনি উম্যায়াহ গোত্রের ইয়াজিদ”।
৩। হাফিজ ইবন কাছীর একই হাদীস উল্লেখ করেছেন তাঁর সুবিখ্যাত আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহ্যায়াহ গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ২৫৬ নং পৃষ্ঠায়। "হযরত আবুযার ঘিফারী (রাঃ) থেকে। এই বর্ণনায় ‘যার নাম ইয়াজিদ হবে’ এই কথাটি অনুপস্থিত।
৪। হাদীসটি নিম্নোক্ত গ্রন্থেও বর্ণীত আছে।
মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা- খণ্ডঃ ৮, পৃঃ ৩৪১, হাদীস নং ১৪৫; দালাইল উন নবুয়্যাত লিল বায়হাকী আবওয়াব ঘাজওয়া তাবুক- হাদীস নং ২৮০২; মাতালিব আল-আলিয়্যাহ- হাদীস নং ৪৫৮৪।
৫। আমর বিন ইয়াহিয়া সায়ে’দ বিন আমর বিন সায়ে’দ তাঁর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, "আমি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সাথে মসজিদে নববীতে বসেছিলাম এবং মারওয়ান আমাদের সাথে ছিলেন। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছিলেনঃ “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ (সাঃﷺ) বলেছেন, কুরাইশ বংশের কিছু যুবকদের দ্বারা আমার উম্মত ধ্বংস প্রাপ্ত হবে”। মারওয়ান বলেন, আল্লাহ এই ধরণের যুবকদের অভিশাপ দেন। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি বলতে পারি অমুক, অমুকের পুত্র অমুক, তমুকের পুত্র তমুক যদি আমি চাই। হযরত আমর বিন ইয়াহিয়া বলেন, আমি আমার দাদার সাথে বনী মারওয়ানে গিয়েছিলাম যখন তারা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছিল এবং এক জন যুবককে দেখতে পেলাম। আমার দাদা বললেন তারাও তাদের একজন হবে। আমরা বললাম তা আপনি ভাল বলতে পারবেন।
[সহীহ বুখারীঃ কিতাবুল ফিতনা, (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮০, তৌহিদ ফাউন্ডেশন - ৭০৫৮) ]
৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ (ﷺসাঃ) বলেছেন- আল্লাহ তা’আলার সাহায্য প্রার্থনা কর ৭০ দশক হতে এবং এক যুবকের রাজত্বকাল হতে।
[মুসনাদ ইমাম আহমদ, হাদীস নং ৩৮০০]
৭। সহীহ বুখারী শারীফের ব্যাখ্যাকারী এবং ফাতহুল বারীর লেখক হাফিজ আহমদ বিন হাজর আসকলানী (রঃ) মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা সূত্রে বর্ণনা করেন, "হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বাজারে যাওয়ার সময় প্রার্থনা করত ‘ও আল্লাহ, আমাকে ৬০ হিজরী এবং যুবকের রাজত্বকাল পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখ না’
হাফিজ ইবন হাজর আসকলানী (রঃ) এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এই হাদীসে ৬০ হিজরীতে একজন শাসকের কথা বলা হয়েছে। হাদীস অনুসারে তাই ঘটে। ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যা এই বছরেই শাসনে বসেন এবং ৬৪ হিজরীতে মারা যান।
৮। সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকারী ইমাম বদরুদ্দীন আইনি (রঃ) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘প্রথম বালক যে শাসন করবে’এই কথা দ্বারা ইয়াজিদকে বুঝানো হয়েছে। [উমদাত উল কাদরী ভলি. ১৬, পেজ ৩৩৩]
মূলত এই কারণে আগেরকার যুগের বড় বড় আলেমগণ ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যার নামের শেষে ‘আল্লাহ এর লানত বর্ষিত হোক’ কথাটি লিখতেন। অথচ এই শেষ যুগে এসে ওহাবী/সালাফী/আহলে হাদীস নামের দলটির নেতারা এই ব্যক্তির নামের শেষে ‘আল্লাহ এর রহমত বর্ষিত হোক' কথাটি ব্যবহার করে চলেছে। সত্যিই প্রসংশা করার মতো তাদের প্রতিভা ও ধর্মজ্ঞান! যেই ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রাণপ্রিয় নাতির হত্যাকারী তার নামের শেষে ......., এটা ভাবতেও যে কি কষ্ট।